ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চাকুরী দেওয়ার নামে যুবকের টাকা আত্মসাৎ

পেকুয়ায় জনস্বাস্থ্যের কর্মচারীর বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে মাস্টাররোলে ‘অফিস সহায়ক’ পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে যুবকের কাছ থেকে ১লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ জনস্বাস্থ্যের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা করেছে ভূক্তভোগী। গতকাল রবিবার (১২ নভেম্বর) চকরিয়া সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে প্রতারণার মামলাটি করেছেন বান্দরবান জেলার লামা পৌরসভার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন হৃদয় নামের এক যুবক। মামলায় আসামী করা হয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড়ের আরব সিকদার পাড়া গ্রামের হাবিব উল্লাহর পুত্র ও পেকুয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের সাবেক নলকুপ মেকানিক আনিসুল ইসলামকে (বর্তমানে ঈদগাহ উপজেলা জনস্বাস্থ্যে অফিসে কর্মরত)। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবার জেলার লামা পৌরসভার এলাকার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন হৃদয় পেকুয়া শহীদ জিয়া বিএমআই কলেজে পড়ালেখাকালীন সময়ে গত ২/৩ বছর পূর্বে পেকুয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মচারী আনিসুল ইসলামের সাথে তার পরিচয় হয়। পেকুয়া উপজেলা পরিষদে অবস্থিত উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিস ও পেকুয়া বিএমআই কলেজ পাশাপাশি। পরিচয়ের সুবাধে কলেজ টাইমের পরে আনিসুল ইসলামের সাথে প্রায় সময় উপজেলায় দেখা হতো। এক পর্যায়ে মোশাফরফ তাকে একটা চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিতে বলে। পরে তাকে পেকুয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে ‘অফিস সহায়ক’ পদে মাস্টার রোলে চাকুরী দিতে পারবেন মর্মে আনিসুল জানায়। এরজন্য মোশারফের কাছ থেকে খরচের কথা বলে এক লাখ টাকা দাবী করেন আনিসুল।

ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন বলেন, আনিসুল ইসলামের কথামতো সহজে বিশ্বাস করে ধারদেনা করে গত ২২/০৭/২০২১ ইংরেজী তারিখে কয়েকজন আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের স্বাক্ষী রেখে আনিসুল ইসলামকে এক লাখ টাকা এবং আমার ছবি সম্বলিত বায়োডাটা দিই। টাকা নেওয়ার সময় আমাকে বলে যে, এক মাসের মধ্যে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসে মাস্টাররোলে ‘অফিস সহায়ক’ পদে আমার মাষ্টার রোলের চাকুরী হয়ে যাবে। কিন্তু মাসের পর মাস, বছরের পর বছর যায় আমার চাকুরী হয়না। আনিসুল ইসলামও আমার সাথে আর দেখা করেনা। চাকুরী দিতে না পারলে টাকাগুলো ফেরৎ দেওয়ার জন্য বলি। তিনি টাকাগুলো আজ দিবেন, কাল দিবেন বলে বছরের পর বছর কালক্ষেপণ করে আসছে।

প্রতারণার শিকার মোশারফ হোসেন কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি একজন গরীব মানুষ। বর্তমানে আমি লামা মাতামুহুরী ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়ণরত আছি। চাকুরী দেওয়ার নামে আমার সাথে সরল বিশ্বাসে প্রতারণা করেছে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের নলকুপ মেকানিক আনিসুল ইসলাম। তার কাছ থেকে আমার টাকাগুলো উদ্ধারের জন্য কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও তারা আনিসুলের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমি আদালতে মামলা করেছি। এখন আমি ন্যায় বিচার চাই। আমার টাকা ফেরৎ চাই।

অভিযোগের ব্যাপারে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের সাবেক কর্মচারী আনিসুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দিয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলে তিনি এ প্রতিবেদকের কল রিসিব না করায় বক্তব্য সংযোজন করা সম্ভব হয়নি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রহারণার বিষয়টি প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কর্মচারীর আনিসুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: